অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

রাউজানে হবে একটি বিসিক শিল্পনগরী

0
1453609467
প্রস্তাবিত শিল্পনগরী। ফাইল ছবি।

চট্টগ্রামে আরো একটি বিসিক শিল্পনগরী হচ্ছে। জেলার রাউজান উপজেলায় প্রস্তাবিত এই শিল্পনগরী স্থাপনে ব্যয় হবে প্রায় ৮০ কোটি টাকা। ১৮৪টি শিল্প প্লটে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ইউনিট স্থাপিত হবে।

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনের জন্য প্রকল্পটি উপস্থাপন করার কথা রয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। সোমবার পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রায় দুই যুগের বেশী সময়ের পর নতুন এ শিল্পনগরীতে  মধ্যে ১০ শতাংশ ইউনিট নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সংরক্ষণ করা হবে। শিল্প ইউনিটগুলোতে প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা স্থানীয়ভাবে দারিদ্র্য হ্রাসে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়।

শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম জেলায় ১৯৭০ থেকে ১৯৯০ সালে পাঁচটি শিল্পনগরী স্থাপন করে বিসিক। শিল্পনগরীগুলোতে ৬২৬টি প্লট ইতোমধ্যে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। বরাদ্দকৃত প্লটে ২৯৯টি শিল্প ইউনিটের মধ্যে চালু রয়েছে ২৭৩টি ইউনিট। বর্তমানে এখানে কোন খালি প্লট না থাকায় স্থানীয় শিল্প উদ্যোক্তাদের চাহিদার প্রেক্ষিতে রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী রাউজান উপজেলায় একটি বিসিক শিল্প পার্ক স্থাপনের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়কে লিখিত অনুরোধ (ডিও) জানান।

স্থানীয় সংসদ সদস্যের অনুরোধ ও স্থানীয় চাহিদার প্রেক্ষিতে শিল্পনগরী স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় বিসিকসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থা কার্যালয়ের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি সম্ভাবত্য যাচাই কমিটি গঠন করে। এই কমিটি রাউজান উপজেলা সদর হতে চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি সড়কের রাঙ্গামাটি অভিমুখে তিন কিলোমিটার দূরত্বে মহাসড়কের পূর্বপাশে ঢালারমুখ এলাকায় ৩৫ একর আয়তন বিশিষ্ট বিসিক শিল্পনগরী স্থাপনের সুপারিশ করে। এই সুপারিশ অনুযায়ী রাউজান এলাকায় একটি শিল্পনগরী স্থাপনে শিল্প মন্ত্রণালয় ‘বিসিক শিল্পনগরী রাউজান’ শীর্ষক প্রকল্পটি প্রণয়ন করে।

প্রকল্পটির ওপর ২০১৬ সালের ৩ এপ্রিল প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। পিইসি সভায় কতিপয় সিদ্ধান্ত পরিপালন সাপেক্ষে প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়। পিইসি সভার সুপারিশ অনুযায়ী উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠিত করে ৭৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে সম্পূর্ণ সরকারী অর্থায়নে ২০১৬ সালের জুলাই হতে ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্পের প্রধান প্রধান কার্যক্রমের আওতায় ৩৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। এরমধ্যে ৩০ লাখ ২২ হাজার ঘনমিটার ভূমির উন্নয়ন, ৩৭৫ বর্গমিটার প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, ৪৬ বর্গমিটার পাম্প ড্রাইভার কোয়ার্টার নির্মাণ করা হবে। এছাড়া অন্য কার্যক্রমগুলো হচ্ছে- ২০ হাজার ৪১৫ বর্গমিটার অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণ, ৭১ হাজার মিটার ড্রেন নির্মাণ, ৫ দশমিক ৩২ কিলোমিটার বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণ, ৬ হাজার ৪৫০ মিটার গ্যাস লাইন স্থাপন, ১টি ডীপ টিউবওয়েল নির্মাণ, ২ দশমিক ৫ কিলোওয়াট সোলার প্যানেল, ২০টি কালভার্ট ক্রস ড্রেন, ১৮৪টি শিল্প স্থাপনের জন্য প্লট তৈরি।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজ পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রস্তাবিত শিল্পনগরীতে ১৮৪টি শিল্প প্লটে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ইউনিট স্থাপিত হবে, যার মধ্যে ১০ শতাংশ মহিলা উদ্যোক্তাদের জন্য সংরক্ষণ করা হবে। এ শিল্প ইউনিটসমূহে প্রায় ৭ হাজার ৫০০ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে যা, দারিদ্র্য হ্রাসে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।