অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

সুদীপ্ত হত্যা: লালখান বাজারের মাসুমসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন

0
.

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ নেতা চাঞ্চল্যকর সুদীপ্ত বিশ্বাস হত্যা মামলায় নগরীর লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক যুবলীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুমসহ ২৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আগামী ৩০ অক্টোবর সাক্ষী গ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত। এছাড়া এক আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

আজ সোমবার (৩ অক্টোবর) দ্বিতীয় অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. আমিরুল ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী জানিয়ে বলেন, সুদীপ্ত হত্যা মামলার চার্জ গঠনের শুনানির জন্য দিন নির্ধারিত ছিল আজ। আদালত আসামিদের ডিসচার্জ পিটিশন নামঞ্জুর করে ২৪ জন আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন। আগামী ৩০ অক্টোবর সাক্ষী গ্রহণের দিন ধার্য করেন আদালত। চার্জ গঠনের সময় ২৪ জন আসামির মধ্যে আবু জিহাদ সিদ্দিক নামে এক আসামি ছাড়া জামিনে থাকা অন্য আসামিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুপস্থিত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৬ অক্টোবর সকালে নগরীর সদরঘাটের দক্ষিণ নালাপাড়ায় নিজ বাসার সামনে মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাসকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার বাবা মেঘনাথ বিশ্বাস বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন।

থানা পুলিশ, ডিবির হাত ঘুরে মামলার তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। অভিযোগপত্রে মোট ২৪ জনকে আসামি করা হয়। এদের মধ্যে ১৮ জন বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হন। পরবর্তীতে ২৪ আসামির মধ্যে ২৩ জন জামিনে রয়েছেন।

পিবিআই’র দেয়া চার্জশিটে সুদীপ্ত খুনের নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে লালখানবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুমের নাম উল্লেখ করা হয়। দিদারুল আলম মাসুমের পাশাপাশি খুনে সরাসরি জড়িত হিসেবে খাইরুল নূর ইসলাম ওরফে খায়ের, আমির হোসেন ওরফে বাবু, মোক্তার, জিহাদসহ ২৪ জনকে আসামি করা হয়। সাক্ষী করা হয়েছে ৭৫ জনকে।

এই হত্যা মামলায় ২০১৯ সালের ৪ আগস্ট দিদারুল আলম মাসুমকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করে পিবিআই।  তিনি বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।

চার্জশিটে হত্যাকাণ্ডের বিবরণ দিয়ে বলা হয়, লালখানবাজার এলাকা থেকে আটটি অটোরিকশা করে দক্ষিণ নালাপাড়া গিয়েছিল হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা। পিবিআই মামলার তদন্তভার নেওয়ার পর সাতটি অটোরিকশা জব্দ করে। জব্দ করা হয় একটি মোটরসাইকেলও। এসব অটোরিকশা চালকদের মধ্যে তিন জন সাক্ষী হিসেবে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামি মিজানুর রহমান জানিয়েছিলেন, সুদীপ্ত হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন লালখানবাজার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুম। যিনি ঘটনার আগের দিন আরেক আসামি আইনুল কাদের নিপুকে দুই ঘণ্টার ভেতর কাজ শেষ করে, পুরো ঘটনা ভিডিও করে আনার নির্দেশ দেন।

চট্টগ্রাম সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি থাকার সময় মাসুম প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ২০১৪ সালে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর নগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের বলয়ে চলে আসেন। মাঝে তিনি সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী ডা. আফসারুল আমীনের পক্ষের লোক হিসেবেও নিজেকে পরিচয় দিতেন।