চট্টগ্রাম কারাগার থেকে বেরিয়েই অপহরণের শিকার ঠিকাদার সুভাষ চাকমা!
দীর্ঘ ১১ মাস কারা ভোগের পর উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রিয় কারাগার থেকে বের হয়েই অপহরণের শিকার হয়েছে সুভাষ চাকমা নামে এক ঠিকাদার। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রিয় কারাগারের সামনে থেকে সুভাষ চাকমাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে তার স্বজনরা অভিযোগ করেছেন।
আজ শুক্রবার বিকালে সুভাষ চাকমার পরিবার থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযগো করেন পরিবারের সদস্যরা। তাদের দাবী আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে সাদা পোষাকাধারীরা সুভাষ চাকমাকে নিয়ে যাওয়ার ২৪ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও এখনো তার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। র্যাব, পুলিশ গোয়েন্দা সংস্থা কেউ সুভাষ চাকমাকে আটকের বিষয়টি স্বীকার করছে না বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন ঠিকাদার সুভাষের ভাতিজা রিকু চাকমা।
তবে র্যাব-৭ এর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন এ নামে কাউকে তারা আটক করেন নি।
সংবাদ সম্মেলনে ভাতিজা রিকু চাকমা অভিযোগ করেন, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে চেকসহ উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমার এর হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামী সুভাষ চাকমা কারাগার থেকে মুক্তি পান। কারাগার থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে সাদা পোষাকদারী দুই ব্যক্তি আমার চাচার উপর ঝাপিয়ে পড়ে।
তাদের গতিবিধি সন্দেহ হলে আমার চাচা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। দৌড়ানো অবস্থায় আমার চাচাকে ডিইজি প্রিজন সেল গেইটের সামনে আটক করে দেয়াল টপকিয়ে সিএনজি যোগে আমার চাচাকে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে আমরা সাথে সাথে কোতায়ালী থানা, ডিবি ও চান্দগাও র্যাব কার্যালয়ে যোগাযোগ করি। সবাই আটকের বিষয়ে অস্বীকার করে। আমরা কোতায়ালী থানায় জিডি করতে চাইলে ডিউটি অফিসার জিডি গ্রহণ করে নি।
তিনি আরো জানান, ২/৪মাস আগে রাঙ্গামাটি করাগার থেকে বের হলে তাকে অন্য একটি হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। চাচা দীর্ঘ ১১ মাস কারাগারে ছিলেন। তাকে ৩টি হত্যা মামলায় সন্দেহজন আসামী করা হয়। অথচ এসব ঘটনায় তিনি সম্পৃক্ত নাই।
চাচাকে বার বার জেল গেইট থেকে আটক করাই আমরা নট এরেস্ট হাইকোর্টে রিট পিটিসন করি। সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়, পুলিশের জিআইজি, এসপি, ওসিসহ ২১ জনকে বিবাদী করা হলে হাইকোট সুভাষ চাকমাকে পূর্ণ গ্রেফতার না করার নির্দেশ দেন।
তিনি আরো জানান, আমার চাচা খুব বিপদে আছেন ও জীবন সংকটাপন্ন। তার চিন্তায় পরিবারের সদস্যরা এবং স্ত্রী চরম অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিনি বার বার জ্ঞান হারাচ্ছেন।
আমরা বিশস্থ সুত্রে জানতে পারি বর্তমানে র্যাব -৭ এর হেফাজতে আছে। রাত ২টা পযন্ত র্যাব কার্যালয়ের আশেপাশে অবস্থান করেছি তার হদিস পাই নাই। আমার চাচার জীবন রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী ,স্বরাষ্ট মন্ত্রী ,পুলিশ কমিশনার, র্যাব-৭ এর অধিনায়ক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে রিকু চাকমার অভিযেগের প্রেক্ষিতে জানতে চাইলে র্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এএসপি মো. মাশকুর রহমান পাঠক ডট নিউজকে বলেন, চট্টগ্রাম কারাগারে আমাদের কোন অভিযান হয়নি। তাছাড়া এ নামে কোন লোক আমাদের হেফাজতে নাই। জামিনে বেরিয়ে যাওয়া কোন লোককে র্যাব গ্রেফতার করেনি। তারা যে অভিযোগ করছে সেটা ঠিক নয়।
সরকার ও প্রশাসনের নিকট আবেদন করছি,সুভাষ চাকমাকে খুজে বের করা হোক।