অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

১১ মার্চ থেকে সারাদেশের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট

0
.

শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণসহ ১১ দফা দাবী বাস্তবায়নে এমপিও ভুক্ত ৯টি শিক্ষক-কর্মচারী সংগঠনের মোর্চা শিক্ষক-কর্মচারী সংগ্রাম কমিটি এসএসসি পরীক্ষা শেষে আবারো আন্দোলনে নামছে।

আগামী ১১ মার্চ থেকে বেসরকারি এমপিও ভুক্ত স্কুল ও কলেজে শুরু হচ্ছে অবিরাম ধর্মঘটের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। চট্টগ্রামে এ কর্মসূচি সফল করার লক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ শিক্ষত সমিতি চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি ও গভনিং বডির সভাপতি এবং স্থানীয় সাংসদের সাথে ১০মার্চ পর্যন্ত মতবিনিময় সভা চলবে।

গতকাল বুধবার ৭ মার্চ বিকেলে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বাশিস) চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার সভাপতি সৈয়দ লকিতুল্লাহ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

সংগঠনের আন্দরকিল্লাস্থ শিক্ষক ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় বিভিন্ন জেলা ও আঞ্চলিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। কর্মসূচি বাস্তবায়নে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা মূলক বক্তব্য রাখেন, সহ-সভাপতি গোলামুর রহমান ও নুরুল মোস্তফা, আ ক ম শহীদুল্লাহ মানিক।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অঞ্চল চৌধুরীর সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিমুল মহাজন,আলতাজ মিয়া, অঞ্চল চৌধুরী, জেলা নেতৃবৃন্দের মধ্যে রনজিৎ নাথ, নুরুল হক ছিদ্দিকী, মোঃ ওসমান গণি, মোঃ জানে আলম, প্রদীপ কানুনগো, তাপস চক্রবর্ত্তী, আঞ্চলিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে দেবেশ দাস, মনিকা সেন, স্বপন চন্দ্র সাহা, শক্তি চৌধুরী, অসীম চক্রবর্ত্তী প্রমুখ।

শিক্ষক-কর্মচারি নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের শিক্ষার ৯৮% দায়িত্ব পালন করছেন বেসরকারি এমপিও ভুক্ত স্কুল, কলেজ ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর শিক্ষক-কর্মচারিরা। কিন্তু বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে বৈষম্যের হার বেড়েই চলেছে। শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষক-কর্মচারিদের স্বতন্ত্র বেতন স্কেল নির্ধারণের কথা বলে আসলেও বর্তমানে তাতে মন্ত্রীর কোন আন্তরিকতা নেই। কিন্তু দুঃখের বিষয় শিক্ষামন্ত্রী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে এ পর্যন্ত কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। ইতোমধ্যে উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা কর্মসূচি সফল করতে উপজেলা ও জেলা নেতারা সাংগঠনিক কর্মসূচি পালন করছেন।

১১ মার্চ থেকে সারা দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবিরাম ধর্মঘট এবং ১৪ মার্চ ঢাকা কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি ১১ মার্চ প্রতিটি উপজেলা সদরে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় বৃহত্তর চট্টগ্রাম থেকে আড়াই হাজার শিক্ষক-কর্মচারীদের উপস্থিত নিশ্চিত করার জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

দাবী সমূহ হল- (১) শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করতে হবে। (২) সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ৫% বার্ষিক প্রবৃদ্ধি, পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বাংলা নবর্বষ ভাতা, বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা প্রদান করতে হবে। (৩) অনুপাত প্রথা বিলুপ্ত করে সহকারি অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিতে হবে। (৪) বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারি প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারি প্রধান শিক্ষকের অনুরূপ প্রদান করতে হবে। শিক্ষক-কর্মচারীদের পূর্বের ন্যায় টাইম স্কেল দিতে হবে। (৫) বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের আর্থিক সুবিধা প্রদানের পরিবর্তে অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ পেনশন চালু করতে হবে। (৬) নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং অনার্স ও মাস্টার্স কোর্সে পাঠদানকারী শিক্ষকসহ বিধিমোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্ত করতে হবে। (৭) ইউনেস্কোর সুপারিশ অনুযায়ী শিক্ষাখাতে জিডিপি’র ৬% এবং জাতীয় বাজেটের ২০% বরাদ্দ রাখতে হবে। (৮) বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো যুগোপযোগীকরণ ও সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের চাকরি বিধিমালা অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে। (৯) শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে বেসরকারি শিক্ষকদের ৩৫% প্রেষণে নিয়োগ দিতে হবে। (১০) কারিগরি শিক্ষা উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি কারিগরি ও ভোকেশনাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে। (১১) জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে হবে।