অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চট্টগ্রামে ব্রয়লার মুরগী ছাড়া সব পণ্যের দাম বাড়তি

0
.

চট্টগ্রামে রমজানের মাঝামাঝি সময়েও এসেও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমেনি। বরং কিছু কিছু পণ্যে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে চলতি সপ্তাহে ব্রয়লারের মুরগীর দাম কিছু কমে এসেছে।

শুক্রবার (৯ জুন) নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে, রমজানের শুরুতে প্রধান ভোগ্যপণ্য ছোলা, চিনি, ডাল, আদার দাম বাড়ছে। তা আর কমার কোনো লক্ষণ নেই। সেই সঙ্গে বেড়ে চলেছে চালের দামও। তবে পেঁয়াজের দাম ওঠানামার মধ্যে রয়েছে।

.

রমজানের এক সপ্তাহ আগে পাইকারি বাজারে ছোলার দাম ছিল কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। শুক্রবার পাইকারি বাজারে সে ছোলা বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। আবার উন্নতমানের ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়।

একইসঙ্গে সব ধরনের ডালের দামও বেড়ে চলেছে। দুই সপ্তাহ আগে খেসারি ডাল প্রতি কেজির দাম ছিল ৬৫ টাকা। এখন দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। মটর ডাল ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেড়ে চলেছে চিনির দামও। দুই সপ্তাহ আগে চিনি প্রতি কেজি ৫৫ টাকা থেকে বেড়ে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা।

মুড়ি, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, খেজুরের দামও বাড়ছে। মজুতদাররা কৌশলে রোজার আগে থেকে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ ভোক্তাদের।

.

তবে পাইকারি ব্যবসায়ীদের বরাবরের মতো দাবি, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোগ্যপণ্যের দরবৃদ্ধির কারণে স্থানীয় বাজারেও দাম বেড়েছে।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী পাঠক ডট নিউজকে জানান, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে বাজারে মনিটরিং টিম পরিচালিত হচ্ছে। রমজানে জেলা প্রশাসনের দুইটি মনিটরিং টিম মাঠে কাজ করছে। বাজারে দাম বৃদ্ধি ঠেকাতে প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে।

নগরীর চকবাজার কাঁচাবাজার ও কাজির দেউড়ি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ওঠানামার মধ্যে রয়েছে পেঁয়াজের বাজার। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৬ টাকা, সয়াবিন (বোতলজাত) ১০ টাকা বেড়ে ৯৫ থেকে ১০৫, মুড়ি ৭০, খেজুর মান ভেদে ১০০ থেকে ২৫০, খেসারি ডাল ৬৫ থেকে ৭০, রসুন ২০০ থেকে ২১০, কিসমিস ৪০০ থেকে ৫০০, মটর ডাল ৭০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি করছে।

চকবাজারের মুদি দোকান ব্যবসায়ী ছাবের আহমদ বলেন, রমজানের আগে পণ্যের দাম স্বাভাবিক থাকলেও রমজানের এক সপ্তাহ আগে হু হু করে বেড়ে গেছে। কি কারণে দাম বেড়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রমজানে ভোগ্যপণ্য মজুদ ও সিন্ডিকেটের কারণে দাম বেড়ে যায়। আজ ১৩ রমজান চললেও দাম কমার লক্ষণ নেই।

.

কাঁচাবাজারে দাম বেড়েছে মরিচের। সপ্তাহ আগে খুচরা বাজারে মরিচ প্রতি কেজি ১৬০ টাকা বিক্রি হলেও রমজানে বেড়ে ১৮০, বেগুন ৬০ থেকে বেড়ে ৭০, টমেটো ৩০ থেকে বেড়ে ৪০, ধনিয়া ১০০ থেকে ২০০, শসা ১৫ থেকে বেড়ে ৩০, গাজর ৬০ থেকে কমে ৪০, গরুর মাংস ৫০০ থেকে ৬০০, রুই ১৮০ থেকে বেড়ে ২০০, রুই বড় ২৮০ থেকে বেড়ে ৩০০, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে বেড়ে ১৬০, লটিয়া ৮০ থেকে বেড়ে ১২০, চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৬৫০ টাকা।

কাজির দেউড়ি কাঁচাবাজারের মাছ ব্যবসায়ী মো. ইলিয়াছ জানান, বৃষ্টি হলে মাছের দাম কমে যাবে। তবে রমজানের আগে মাছ-মাংসের দাম স্বাভাবিক থাকলেও রমজানে কিছুটা বেড়েছে।

এদিকে গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লারের মুরগীর দাম কেজি প্রতি কমে গেছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ৩০ টাকা। তবে কাজীর দেউড়ি বাজারে সে দাম ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা বলে জানান ‍মুরগী ব্যবসায়ি আব্দুল আজিজ।

.

এদিকে নগরীর পাইকারি ও খুচরা দুই পর্যায়েই চালের দাম বেড়ে চলেছে। দেশি জাতের চালের দাম বস্তাপ্রতি প্রায় ২০০ টাকা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। দুই সপ্তাহ আগে খুচরা বাজারে চাল প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও রমজানের এক সপ্তাহ আগে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় ঠেকেছে। তবে নতুন জাতের ধান বাজারে আসতে শুরু করায় দাম কমতে পারে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

চকবাজার কাঁচাবাজারের সবজি ব্যবসায়ী হামিদ উল্লাহ বলেন, বাজারে এখন প্রচুর সবজি রয়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে নগরীতে পর্যাপ্ত পরিমাণে সবজি আসছে। বাজারে সংকট নেই। গত সপ্তাহে সবজির দাম বৃদ্ধি থাকলেও এ সপ্তাহে কিছুটা কমতে পারে। তবে বৃষ্টি হলে দাম বাড়বে। দাম বাড়ার কারণ প্রসঙ্গে বলেন, বৃষ্টি হলে বাজারে সবজির সংকট দেখা দেয়। দূরদূরান্ত থেকে নগরীতে পর্যান্ত সবজি আসে না। তাই দাম বাড়ে।