অনুসন্ধান - অন্বেষন - আবিষ্কার

চট্টগ্রাম সিটি কলেজের অধ্যক্ষ সহ ১০ শিক্ষককে অবরুদ্ধ করেছে ছাত্রলীগ

0
.

১৭ বছর আগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বাতিল করে ছাত্র সংসদের আহবায়ক কমিটি গঠন নিয়ে নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ অধ্যক্ষসহ অন্তত ১০ শিক্ষককে অফিস কক্ষে আটকে রেখে বাইরে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ করছে ছাত্রলীগ।

আজ মঙ্গলবার (২১ জুন) সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন শিক্ষকরা।

জানাগেছে, ছাত্রসংসদের দুটি কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার বিকেলে ছাত্রলীগ সমর্থিত ছাত্রসংসদের মেয়াদোত্তীর্ণ দুটি কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন দুটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।

গঠিত দুটি আহ্বায়ক কমিটিতে ছাত্রলীগের একটি অংশ থেকে পদ পেয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অপর একটি অংশের নেতাকর্মীরা। বিকেলে কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সুদীপা দত্ত স্বাক্ষরিত আগামী এক বছরের জন্য দুটি ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর বিক্ষোভ করছেন কলেজ ছাত্রলীগের অপর অংশের নেতাকর্মীরা।

তারা কলেজ অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষসহ কয়েকজন শিক্ষককে তাদের কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিক্ষুব্ধরা ছাত্রলীগ কর্মীরা কলেজের দ্বিতীয় তলায় অধ্যক্ষের কক্ষে যাওয়ার প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছেন। অধ্যক্ষসহ শিক্ষকরা তার কক্ষে রয়েছেন। কক্ষের বাইরে অধ্যক্ষ ও নতুন দুটি আহ্বায়ক কমিটির বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিচ্ছেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। বিকেল প্রায় ৫টা থেকে এ বিক্ষোভ শুরু হয়। সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ অধ্যক্ষসহ অন্তত ১০ জন শিক্ষক।

আন্দোলনরত ছাত্রলীগকর্মীদের মধ্যে মোহাম্মদ সাজ্জাদ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ছাত্রসংসদের এডহক কমিটি গঠনে কোনো নিয়ম-নীতি অনুসরণ করা হয়নি। অছাত্রদেরও কমিটিতে রাখা হয়েছে। এটা এক পক্ষকে (স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতা) খুশি করতে কমিটি। আমরা এর প্রতিবাদে বিকেল ৫টা থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। ‘

বিলুপ্ত করা তমিটির বৈকালিক শাখার ভিপি রাজিবুল হাসান রাজন ভিপি (ইতোপূর্বে স্বেচ্ছায় পদত্যাগকারী) রাতে পাঠক ডট নিউজকে বলেন, দীর্ঘদিনের কমিটি বাতিল করে অধ্যক্ষ স্যার সবাইকে সদস্য রেখে একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করেছেন।  এ কারণে একটি অংশ এর বিরোধিতা করে এবং বাতিল চেয়ে অধ্যক্ষ স্যারসহ কয়েকজন শিক্ষকে আটকে রাখে। পরে খবর পেয়ে ছাত্রসংসদের সকল ছাত্র কলেজে গেলে তারা পালিয়ে যায়।

অধ্যক্ষসহ শিক্ষকদের অবরুদ্ধ রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বহিরাগতরা এসে হামলা চালাতে পারে এ আশঙ্কা এবং শিক্ষকদেরও নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে আমরা অধ্যক্ষের কক্ষের বাইরে ফটক বন্ধ করে রেখেছি। যাতে ভেতরে কেউ অবৈধভাবে প্রবেশ করতে না পারে। আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এখানে অবস্থান কর্মসূচি চলবে। ‘

জানা যায়, ২০০৫ সালের ৮ অক্টোবর সরকারি সিটি কলেজ চট্টগ্রামের ১৮ সদস্যবিশিষ্ট দিবা শাখা গঠন করা হয়েছিল। ওই কমিটির ভিপি আবু তাহের এবং জিএস ছিলেন মারুফ আহমেদ সিদ্দিকী। একই দিনে রাজিবুল হাসান রাজন ভিপি এবং জাহেদুল হক মার্শালকে জিএস করে বৈকালিক শাখা গঠিত হয়েছিল। ওই দুটি মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত করে দুটি এডহক কমিটি করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে বৈকালিক শাখা ১১ সদস্য এবং দিবা শাখা ১৮ সদস্যবিশিষ্ট করা হয়।